বরেন্দ্রভূমি রাজশাহীর তানোর

 পরিচিতি 

শস্য শ্যামল তানোর বুক সবুজের গালিচায় ঢেকেছে ধানের ক্ষেত। ধানের ক্ষেত তো কতই আছে অন্য জনপদে কিন্তু তানোরের ধান ক্ষেতগুলো রকম সকম জনপদ গুলো থেকে আলাদা।ধানসিঁড়ি  নামের নদীর কথা  পড়েছি নিসর্গের কবি জীবনানন্দ দাশের আর তানোর এসে  জানতে পারলাম  ধানসিঁড়ি  ক্ষেতের খোঁজ। এখানকার জমি গুলো ধাপে ধাপে বিন্যস্ত নাম তাই ধানসিড়ি ক্ষেত।জেলা সদর থেকে কিলোমিটার দূরে এই তানোর গড়ে উঠেছে  ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে।





আজ আমরা জানবো তানোর মানুষের জীবন এখানকার মাটির ঘর,স্থানীয় বাজার,তানোরের প্রাচীন বরেন্দ্রভূমির ইত্যাদি।

তানোরের মানুষের জীবনযাত্রা 

তানোরের প্রাচীন  বরেন্দ্রভূমির কৃষি ব্যবস্থা :

 এখানকার জমি কোথাও উঁচু কোথাও নিচু আইল দিয়ে সীমানা দেয়ায় ধাপ তৈরি হয়েছে সিঁড়ির মত। একেতো জমি আবার জল সেচের সুবিধা আছে।বছরে দুই থেকে ফসল ফলায় কৃষক কৃষাণীরা।শুধু ধান নয় গম, পাট, সরিষা, আলু, পান মসুর,কলাইসহ নানারকম সর্ষের  উৎপাদন হয় এখানে। তানোরের ভূমিরূপ এর ভিন্নতা আর অফুরন্ত উর্বরতা এ কৃতিত্ব আসলে বরেন্দ্রভূমির। তানোর এ কৃষি কাজের সাথে জীবন জড়িয়ে আছে প্রায় ৪৪ ভাগ বাসিন্দার।প্রাচীন বাংলায় যখন থেকে কৃষি কাজের সূত্রপাত থেকেই চলছে লোহার   কাজের কারিগরি।কৃষিভিত্তিক সভ্যতায় কৃষকদের পাশাপাশি কামার নামের এই কারিগরদের অবদান অনেক। 

মনোরম গ্রামীণ জীবন ও ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর :

মৃত্তিকা  ঘনিষ্ঠ জীবন তাইতো ঐতিহ্যবাহী মাটির পাত্রের  সমান কদর রয়েছে এখানে। এখানকার মানুষজন মিশুক স্বভাবের সরল।তানোরে সাক্ষরতার হার প্রায়  ৭২.৩১%।১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া তানোর  থানা জনপদ ১১৫ বছর পর ১৯৮৪ সালে রূপান্তরিত হয় উপজেলায়।

তানোর উপজেলা সদরের জমজমাট বাজার :

এই উপজেলায় বেচাকেনার প্রাণকেন্দ্র রয়েছে ১৫টির বেশি । কোনোটা সাপ্তাহিক হাট, কোনটি দৈনন্দিন বাজার।তানোরের হাট বাজার গুলোর মধ্যে নামকরা মুণ্ডমালা, কামারগাঁ,নারায়ণপুর,উল্লাপাড়া ও কালীগঞ্জ হাট।

বরেন্দ্রভূমির আদি জনগোষ্ঠীর সাঁওতাল,মাহালি রাজবংশীওদের জীবনধারা


ভূ বৈচিত্রের জনপদে জীবনধারার বৈচিত্র না থাকলে কি মানায়?তানোর বাঙালি ও ক্ষুদ্র নিগোষ্ঠীর দারুন সহবাস স্থান।সাঁওতালদের পাড়া মানেই মাটির ঘরবাড়ি জীবন।পরিচ্ছন্নতার অলংকরণে সাঁওতালদের ঘরবাড়ি আসলেই দেখার মত।কৃষিজীবী হওয়ায় বাঙ্গালীদের মতো সাঁওতালদেরও প্রধান খাদ্য ভাত, মাছ ও শাকসবজি তাদের প্রধান খাবার।সকালে নাস্তা খাওয়ার চল নেই বলে ঘরের আয়োজন শুরু হয় দুপুর থেকে।পিতৃতান্ত্রিক পরিবার হলেও  পরিশ্রমের বেলায় পুরুষের চেয়ে নারীর  সুনামই বেশি।সাঁওতালরা নিজেদের ঘরবাড়ি নিজেরাই বানায়। ঘরবাড়ির উপাদান বরেন্দ্রভূমির আঠালো মাটি।মোহাম্মদপুর গ্রামের তালটি পাড়া ও মোহনপুরের গ্রামের ভীমপাড়ার মত সাঁওতালদের এমন অনেক পাড়া আছে বিভিন্ন জায়গায়।পাচন্দর ইউনিয়নের গ্রামটি মাহালিদের। সাঁওতালদের মতো মাহালিরাও অন্যতম ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী।কেউ কেউ কৃষিকাজ করলেও মাহালিদের মূল পেশা বাঁশের কাজ।গ্রামের নাম রামপুর টেকনাপাড়া অবস্থান তানোর উপজেলা থেকে কিলোমিটার দূরে বাধাইর  ইউনিয়নে।সাঁওতালদের মতো রাজবংশীরাও কৃষিজীবী।ধর্মীয় সংস্কার জীবিকার প্রয়োজনে গরুর পাশাপাশি বিভিন্ন যত্ন নেয় রাজবংশী ওরা।ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হলেও বাসিন্দা হওয়ায় জীবনধারা তাই বাঙ্গালীদের মতই। 

আরো পড়ুনঃ

ইতিকথা 

২৯৫ বর্গ কিলোমিটার এ তানোরে যেখানে যান না কেন ওদিকে শুদ্ধ সবুজের সমারোহ।বরেন্দ্র জনপদ তানোরে বর্ণিল জীবন ও শস্যর প্রাচুর্যে আসলেই  স্নিগ্ধ তানোর উপজেলা। 





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Growwithnazmin এর'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url