ধূমপান ছাড়ার সহজ ও কার্যকরী কৌশল


উপস্থাপনা

ধূমপান বিষপান, হয় দামি 

আয়ু হয় সংকোচিত জীবন অর্ধগামী।  

পাইপ চুরুট গাঁজা আর সিগারেট বিড়ি,

ধোয়া পান করলে ধূমপান নাম তারি,

লিখেছেন ইমরান হাসান (কবিতার কারিগর)।




তরুণ এই কবির  কবিতার লাইনগুলো বেশ ভালো লেগেছে।প্রকৃতপক্ষে ধূমপান করার ভালো কোন ঠিক নেই।বরং এটি ক্ষতিকর। এই কথাটি আমরা সকলেই জানি।আর এই জানার পরেও আমাদের মত বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মানুষ ধূমপান করে মুলত এর সহজলভ্যতা ও ধূমপানের ওপর কোনো বিধি নিষেধ না থাকার কারণে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর তথ্য মতে,প্রতিবছর প্রায় ৮০ লাখ মানুষ ধূমপানজনিত রোগে মারা যায়।বাংলাদেশেও এই সংখ্যা উদ্বেগ জনক প্রতিদিন হাজারো মানুষ সিগারেটের নেশায় আক্রান্ত হচ্ছে।

যেসব কারণে ধূমপান ছাড়বেন :

১।বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার যে যেমন ফুসফুস, গলা, মুখ,খাদ্যনালী, অগ্নাশয়, মূত্রথলি ও পাকস্থলীর ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা। 

২।স্ট্রোক, দাঁতের মাড়ি রোগ।

৩।অন্যান্য অসুস্থতা স্থায়ী করে 

৪।গর্ভধারণের সমস্যা 

৫।যেকোনো অপারেশনের পর স্থানে ইনফেকশন হওয়া ইত্যাদি।

আজকের ব্লগে আমরা জানবো ধূমপান ত্যাগ করার সহজ ও কার্যকরী কিছু কৌশল।

ধুম্পান ছাড়ার সহজ ও কার্যকরী কৌশল 

১।দৃঢ় ইচ্ছা শক্তি ও ধৈর্য :

নিকোটিনের এই আসক্তি অনেকেই রাখে।আপনার যদি সঠিক পরিকল্পনা ও ইচ্ছা শক্তি থাকে বান ত্যাগ করা কঠিন কিছু না।ঠিক যে মুহূর্তে আপনি সিদ্ধান্ত নিবেন তখন থেকেই আপনাকে সিগারেট খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে এটা চাইলেই সম্ভব যদি আপনার প্রিয় সংকল্প থাকে যে আপনি আর ধূমপান করবেন  না।তবে গবেষণায় বলে,হঠাৎ করে ছেড়ে না দিয়ে আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়লে সফলতার সম্ভাবনার অনেক বেশি।হঠাৎ করে ছেড়ে দেয়া যদি আপনার কাছে কঠিন মনে হয় তবে আপনি এর পরিমাণ দিনে দিনে কমিয়ে দিতে পারেন।অর্থাৎ প্রতিদিন সিগারেটের সংখ্যা কমতে থাকবে।এ পন্থায় আপনি নিজেকে ধীরে ধীরে প্রস্তুত করতে পারবেন এবং একটার সময় পুরি ছেড়ে দিতে সক্ষম হবেন। 

২।ইতিবাচক মানসিকতা :

প্রতিটি ছোট ছোট সাফল্য একটি বড় অগ্রগতি।নিজের প্রতি আস্থা রাখুন আর মনে রাখবেন যে, এই অভ্যাস ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রত্যেকটা দিনই নতুন সুযোগ।ধূমপান ত্যাগ করা কঠিন কিছু না এই মানসিকতা এখন আপনার ভেতর থাকবে তখনই আপনি সফল হতে পারবেন।

৩।পরিবার বন্ধু ও সহকর্মীদের সহযোগিতা নিন:

গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যের সহযোগিতা ধূমপান ত্যাগের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।আপনার বন্ধুবান্ধব পরিবার-পরিজনদেরকে অনুরোধ করুন যেন তারা আপনার আশেপাশে ধূমপান না করে। 

৪।ধূমপানের বিকল্প খুঁজুন :

যখন ধূমপান করতে ইচ্ছা করবে তখন নিজেকে অন্য কাজে ব্যস্ত রাখুন।বন্ধুদের সাথে কথা বলুন অথবা চলে যান, অথবা নাটক সিনেমা দেখুন।চিনি মুক্ত চুইংগাম ও ক্যান্ডি খান ধূমপানের আকাঙ্ক্ষাকে কমানোর জন্য।

৫।খাবারের ধরন পরিবর্তন করুন :

কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে দুধ, ফলমূল ওসবজি খেলে ধূমপানের ও আকর্ষণ কমে যায়।অন্যদিকে ফাস্টফুড,ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল ধূমপানের এর ইচ্ছা বাড়ায়। 

৬।ব্যস্ততা বাড়ান :

অলস সময় পার করলে ধূমপানের ইচ্ছা বেড়ে যায়।তাই নিজেকে প্রডাক্টিভ কাজে ব্যস্ত রাখুন যেন ধূমপান করার সুযোগ না পান।নিয়মিত হাটা,ব্যায়াম করা, বই পড়া বা এমন কোন সব বেছে নিন এটা আপনার মনকে শান্ত রাখবে এবং ধূমপান করতে না পারার যে অস্থিরতা তা কমে যাবে।

৭।ধূমপান করে না এমন মানুষদের সাথে বন্ধুত্ব বাড়ান:

কথায় আছে সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গ  সর্বনাশ।তাই ধূমপান করে না এমন মানুষদের সাথে মিশন এবং বন্ধুত্ব বাড়ান এতে করে আপনি অনুপ্রাণিত হবেন। 

৮।প্রয়োজনে সাইক্রিয়াটিস্ট পরামর্শ নিন:

চেষ্টা করার পরেও যদি সিগারেট ছাড়তে ব্যর্থ হন তবে বা কাউন্সিলারের সহায়তা নিন।প্রয়োজনে বিশেষায়িত মেডিকেশন আপনার জন্য কার্যকরী হতে পারে।

সবশেষে বলতে চাই ছাড়া হলেও অসম্ভব কিছু না।দৃঢ় ইচ্ছা শক্তি ও ইতিবাচক মানসিকতা থাকলে ধূমপান ত্যাগ করতে পারবেন।







এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Growwithnazmin এর'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url