সৌদি আরবে কোন কাজে বেতন বেশি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
সৌদি আরবে কোন কাজে বেতন বেশি একথা ভাবছেন? আপনি যদি সৌদি আরবে গিয়ে কাজ করার কথা ভেবে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্যই।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ জীবিকার তাগিদে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পাড়ি জমায়। তবে সেখানকার বেতন কোন কাজের চাহিদা বেশি কি ধরনের ভিসা রয়েছে সে সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই। আজকের এই আর্টিকেলে সৌদি আরবের বিভিন্ন কাজের ভিসার বেতন সম্পর্কে আলোচনা তুলে ধরবো।
পেইজ সূচিপত্র: সৌদি আরবে কোন কাজে বেতন বেশি
- সৌদি আরবে কোন কাজে বেতন বেশি?
- সৌদি আরবের বেসিক বেতন কত ২০২৫
- সৌদি আরব যাওয়ার জন্য কি কি লাগে?
- সৌদি আরবের ওয়েলডিং এর কাজ
- সৌদি আরব ক্লিনার ভিসা বেতন কত ২০২৫
- সৌদি আরবে ইলেকট্রিক কাজের বেতন কত?
- সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত
- সৌদি আরব প্লাম্বার কাজের বেতন ২০২৫
- সৌদি আরবের হোটেল ভিসা বেতন কত?
- শেষ কথা:সৌদি আরবে কোন কাজে বেতন বেশি?
সৌদি আরবে কোন কাজে বেতন বেশি?
সৌদি আরবের কোন কাজে বেতন বেশি এ কথার উত্তরে প্রথমেই বলবো কনস্ট্রাকশন ও লেবার সেক্টর এর কাজ। যারা বিল্ডিং, রোড,সাধারণ কনস্ট্রাকশন এর সাথে জড়িত তাদের বেতন সাধারণত ৮০০ থেকে ১২০০ রিয়াল পর্যন্ত হয়ে থাকে। কিছু কিছু কনস্ট্রাকশন কোম্পানি খাবার থাকা খাওয়া ফ্রি দেয়। আপনি যদি এই ধরনের কোম্পানিতে কাজ করেন তাহলে ইনকামের বেশিরভাগ টাই জমাতে পারবেন। তারপর যে সেক্টরটার কথা বলব হাউস ড্রাইভার বা কোম্পানির ড্রাইভার।
সৌদি আরবে ড্রাইভার জবের চাহিদা বরাবরই বেশি একজন হাউজ ড্রাইভার মাসে ১২০০ থেকে ১৮০০ রিয়াল পর্যন্ত আয় করতে পারে। আর আপনি যদি একজন কোম্পানির ড্রাইভার হয়ে যান সে ক্ষেত্রে কোম্পানির কাজের উপর নির্ভর করে মাসে ২০০০ থেকে ২৫০০ রিয়াল পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। এবার আসি সেলসম্যানের জবের বিষয়ে। যদি সৌদি আরবে সুপার শপ বা সুপার মার্কেট বা স্টোরে এ সেলসম্যান, কেশিয়ার অথবা স্টোর হেল্পার এর জব পেয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে আপনার বেতন ১২০০ থেকে ১৬০০ রিয়াল পর্যন্ত হবে।
তবে অনেক সুপার শপ বা সুপার মার্কেটের সেলসম্যানের জবে ইন্সেন্টিভ থাকে আপনি যদি বেশি বিক্রি করেন সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত ইনকাম করা যায়। এরপরে যে সেক্টর এর কথা বলবো সেটা হচ্ছে হোটেল বা রেস্টুরেন্ট এর কাজ। সৌদিতে ওয়েটার, ক্লিনার, কুকিং হেলপারদের জন্য জব এভেলেবেল থাকে। এ ধরনের জবে ১২০০ থেকে ১৫০০ রিয়াল পর্যন্ত পেতে পারেন।এছাড়াও টিপস যা দিয়ে মাস শেষে অতিরিক্ত ইনকামের সুযোগ রয়েছে।
এরপর যে সেক্টরের কথা বলব সেটা হচ্ছে হাই স্কিল জব। ইঞ্জিনিয়ার টেকনিশিয়ান বা আইটি রিলেটেড জব গুলোতে সই আবরার কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে বা সার্টিফিকেট থাকতে হবে। তবে আপনি যদি স্কিল্ড হন এসেক্টর গুলোতে কাজ করেন আপনি মাসে ৩০০০ থেকে ৬০০০ রিয়াল পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। সৌদি আরবে অনেক কোম্পানি খাবার বাসস্থান ও ট্রান্সপোর্ট ফ্রি দেয় আবার ওভারটাইম করলে বাড়তে ইনকাম তো থাকেই। আর ফ্রেন্ডলি পরিবেশ থাকলে বেতন ছাড়াও কাজ করাও অনেক সহজ হয়ে যায়।
সৌদি আরবের বেসিক বেতন কত ২০২৫
বেসিক বেতন বিষয়টি নির্ভর করে জাতীয়তা দক্ষতা অভিজ্ঞতা ও কাজের ধরনের উপর। সৌদি আরবে বিভিন্ন ধরনের কর্মসংস্থান রয়েছে একেক ধরনের কাজের উপর নির্ভর করে বেতন নির্ধারণ করা হয়। এছাড়াও কিছু কিছু কাজে অতিরিক্ত ইনকামের সুযোগ থাকে ওভার টাইমের সুযোগ থাকে সেক্ষেত্রে বাড়তি আয় হয়। এদেশে অনেক কোম্পানি আছে যারা ঢাকা-খাওয়া চিকিৎসা ও ভ্রমণ ভাতা দিয়ে থাকে। সৌদি আরবে আরেকটি বড় সুবিধা হল বেতনের ওপর কর নেই এতে করে কর্মীরা মাসের শেষে ভালো পরিমাণ টাকা জমাতে পারে।
সৌদি আরবের বেসিক বেতন ২০২৫ এর একটি তালিকা দেয়া হল
পেশা নাম | বেসিক বা সর্বনিম্ন বেতন | সর্বোচ্চ বেতন |
---|---|---|
বিল্ডিং বা রোড কনস্ট্রাকশন লেবার লেবার | ৮০০ রিয়াল | ১২০০ রিয়াল |
হাউস ড্রাইভার | ১২০০ রিয়াল | ১৮০০ রিয়াল |
কোম্পানি ড্রাইভার | ২০০০ রিয়াল | ২৫০০ রিয়াল |
সেলসম্যান, ক্যাশিয়ার,স্টোর হেলপার | ১২০০ রিয়াল | ১৬০০ রিয়াল |
ওয়েটার,ক্লিনার,কুকিং,হেল্পার | ১২০০ রিয়াল | ১৫০০ রিয়াল |
ইঞ্জিনিয়ার বা আইটি রিলেটেড জব | ৩০০০ রিয়াল | ৬০০০ রিয়াল |
টেকনিশিয়ান | ৩০০০ রিয়াল | ৬০০০ রিয়াল |
সৌদি আরব যাওয়ার জন্য কি কি লাগে?
- প্রথমত একটি বৈধ পাসপোর্ট লাগবে যার মেয়াদ এক বছরের বেশি।ই-পাসপোর্ট হলে ভালো হয়। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন আগের এমআরপি পাসপোর্ট এখন আর দেওয়া হয় না তবে এমআরপি পাসপোর্ট এর মেয়াদ এক বছরের বেশি হলেও চলবে।
- আপনার বয়স হতে হবে 21 থেকে 40 বছরের মধ্যে। ২১ বছরের বেশি বয়স হতে হবে এর নিচে হলে হবে না।
- সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এর ছয় কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- পাসপোর্ট এর সাথে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জমা দিলে ভালো হয়
- এরপর গামকা মেডিকেল স্লিপ ও মেডিকেল চেকআপ। এটি আপনারা যদি নিতে না পারেন কোন এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে সেখান থেকেও সংগ্রহ করবেন যেটা নিতে ১০ ডলার লাগে যেটা ডলারে পেমেন্ট করতে হয়। আর মেডিকেলের খরচ 8500 টাকা।
- গামকা মেডিকেল স্লিপ নেওয়ার পরে সেটাতে উল্লেখিত মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে মেডিকেল চেকআপ করাতে হবে। পর মেডিকেল চেকআপের রিপোর্ট আপনি অনলাইনে দেখতে পাবেন।
- মেডিকেল রিপোর্ট যদি ভালো বা ফিট আসে এরপর মোফা করতে হবে যা এজেন্সি থেকে করে দেওয়া হয়। হতে আপনার ভিসার নাম কোন ক্যাটাগরি প্রভিশন প্রভৃতি উল্লেখ থাকবে।
- এরপর ফিংগার প্রিন্ট আবেদন করতে হবে এটা করার পর একটি স্লিপ আসবে যা পাসপোর্ট এর সাথে যুক্ত করে দিতে হয়।ফী ৬৫০ টাকা
- এরপর এম্বাসিতে সকল কাগজপত্র নিয়ে ই-ভিসার জন্য জমা দিতে হবে।যেহেতু ভিসা এখন অনলাইন ভিত্তিক এগুলো জমা দেওয়ার একদিন দুইদিন অথবা সপ্তাহের মধ্যে ই ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে
- এই ভিসা নিয়ে টিটিসি অর্থাৎ টেকনিক্যাল টিচার্স ট্রেনিং কলেজ জেলায় এ প্রতিষ্ঠান রয়েছে এটি আপনার জেলায়ও রয়েছে এখানে আপনাকে ট্রেনিং করতে হবে এবং সেখান থেকে একটি সার্টিফিকেট পাবেন। টিটিসি থেকে ট্রেনিং কার্ড বা সার্টিফিকেট পাওয়ার পর ফিঙ্গার দিবেন টিটিসিতে।
- এরপর প্রয়োজন হবে বিএমইটি কার্ড বা ম্যানপাওয়ার কার্ড এটাও এখন অনলাইন ভিত্তিক আপনি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
- এরপর আপনাকে বিমান টিকিট কাটতে হবে।
সৌদি আরবের ওয়েল্ডিং এর কাজ
- বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড
- বাংলাদেশ জার্মান টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার
- আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মিরপুর ২ এ অবস্থিত পাক জার্মান কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
- বাংলাদেশ কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার
- নিউ লাইফ ওয়েল্ডিং ট্রেনিং সেন্টার উল্লেখযোগ্য।
সৌদি আরব ক্লিনার ভিসা বেতন ২০২৫
সৌদি আরবে ইলেকট্রিক কাজের বেতন কত?
সৌদি আরবে কোম্পানি ভিসা বেতন কত?
সৌদি আরব প্লাম্বার কাজের বেতন ২০২৫
সৌদি আরবের হোটেল ভিসা বেতন কত?
এখানে একটি কথা বলে রাখা ভালো আবাসিক হোটেল গুলো যদি মক্কা মদিনা এলাকায় হয় সে ক্ষেত্রে আপনার কাজের একটা নিশ্চয়তা থাকে কারণ এই শহরগুলোতে আবাসিক হোটেল গুলো বেশ জমজমাট এবং ভালো চলে। কিন্তু অন্যান্য শহরগুলোতে কখনো কখনো হোটেল মালিক রা কর্মী ছাটাই করে থাকে এটা নির্ভর করে তাদের হোটেলের পর্যটকদের সংখ্যার উপর নির্ভর করে। যদি তারা সেই ভাবে হোটেলে গেস্ট না পায় অর্থাৎ তাদের হোটেল ভালো না চলে সেক্ষেত্রে কর্মী ছাঁটাই হয়ে থাকে। সর্
শেষ কথা: সৌদি আরবে কোন কাজে বেতন বেশি
সৌদি আরবে কোন কাজে বেতন বেশি এ সম্পর্কে বিস্তারিত আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই আপনি সব ধরনের কাজের বেতন এবং সুযোগ সুবিধার সম্পর্কে আপনার একটি ধারণা তৈরি হয়েছে। তবে আপনি যে দেশে যান না কেন আপনাকে অবশ্যই দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করেই পাড়ি জমাতে হবে। তবে অনেকেই আছেন যারা বিভিন্ন রকম প্রতারণার শিকার হয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যার বা যাদের মাধ্যমে যাচ্ছেন তাদের তাদের অভিজ্ঞতা তাদের প্রতিষ্ঠান কতদিনের এবং অন্যান্য মানুষের অভিজ্ঞতা কেমন, পূর্বে তারা কোন লোক পাঠিয়েছে পাঠিয়েছে কিনা এবং তাদের অভিজ্ঞতা প্রভৃতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে তারপরেই আপনাকে লেনদেন করতে হবে। প্রিয় পাঠক আজকে এ পর্যন্তই আমার এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিতদের সাথে লেখাটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ রইল।
Growwithnazmin এর'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url