টিবি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

 

টিবি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আপনি কি জানতে আগ্রহী? তাহলে প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। আজকের ই আর্টিকেলে টিবি রোগের লক্ষণ প্রতিকার প্রতিরোধ সম্পর্কে জানব।

টিবি-রোগের-লক্ষণ-ও-প্রতিকার


 টিভি বা যক্ষা রোগ একটি সংক্রামক ব্যাধি। এ রোগ ব্যাকটেরিয়া মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস  দ্বারা সৃষ্ট। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রায় প্রতি বছর ৩ লাখ ৭৯ হাজার মানুষ টিবি রোগে আক্রান্ত হয়।

 পেইজ সূচিপত্র : টিবি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

টিবি রোগের লক্ষণ কি কি?

 টিবি বা টিউবারকিউলোসিস হল সিরিয়াস ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ সাধারণত আমাদের ফুসফুস কে খুব বেশি পরিমাণে সংক্রমিত করতে পারে। তাছাড়া আমাদের শরীরের কিডনি স্পাইন, ব্রেন বা শরীরের অন্য যেকোনো অংশে সংক্রমণটা ছড়াতে পারে। যে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনের ফলে এই টিউবারকিউলোসিস রোগটা হয় তার নাম হলো মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস।তবে যক্ষা রোগের লক্ষণগুলোর  উপর ভিত্তি করে টিবি রোগকে চিকিৎসকরা দুই ভাগে ভাগ করেছেন সক্রিয় যক্ষা ও সুপ্ত যক্ষা

সাধারণত এটা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলেই ছড়ায়। যদি কেউ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হল তাহলে তার টিবি হয় তাছাড়া যার টিবি হয়ে গিয়েছে এবং একটি ফর্মে যদি তার শরীরের টিবি সংক্রমণটা থাকে তার হাঁচি কাশির মাধ্যমে বায়ুমন্ডলে যে ড্রপলেটটা যায় তার মাধ্যমে তার মাধ্যমে একজন সুস্থ ব্যক্তির দেহে এই টিবি সংক্রমণটা ছড়াতে পারে। জেনে নেই টিবি রোগের লক্ষণ গুলো কি কি।

  1. তিন সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে কাশি বা তার সাথে জ্বর থাকতে পারে
  2.  তাছাড়া যে কফটা বের হয়ে আসবে কাশির সাথে তার সাথে অনেক সময় ব্লাড ও বের হয়ে আসতে পারে।
  3. এছাড়া শ্বাসকষ্ট হতে পারে শরীর খুব বেশি দুর্বল অনুভব হওয়া কিছু খেতে ইচ্ছা না করা
  4. রাতে ঘাম হতে পারে 
  5. বুকে ব্যথা অনুভব করা
  6. কাশি এবং শ্বাসকষ্টের সাথে ব্যথা 
  7. ওজন কমে যাওয়া
সুপ্ত যক্ষা ক্ষেত্রে সাধারণত কোন রকম প্রকাশ পায় না তবে পরবর্তীতে তো সক্রিয় যক্ষাতে রূপান্তর হতে পারে তাই সুপ্ত যক্ষার চিকিৎসা ও গুরুত্ব পূর্ণ।

 টিবি রোগের প্রতিকার

 যক্ষা রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে অনেকের অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকেই চিকিৎসকদের প্রশ্ন করেন টিভি হলে কি এক প্লেটে বা থালায় খেতে পারব? প্রকৃতপক্ষে থালার মাধ্যমে টিভি রোগের জীবাণু এক শরীর থেকে অন্য শরীরে যায় না। সতর্কীকরণ হিসেবে যখন কাশি বা হাঁচি আসলে মুখে রুমাল চেপে ধরুন। সেটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্লেট আলাদা করে দেওয়া বা বিছানা আলাদা করে দেওয়ার থেকে। 

বাড়িতে যদি ছোট বাচ্চা বা বয়স্ক ব্যক্তি থাকে রোগীর যতদিন পর্যন্ত না টিবি রোগের ওষুধ খাওয়া দুই/তিন সপ্তাহর বেশি হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত আলাদা শোয়াটা ভালো কারণ ঘুমের মধ্যে নিঃশ্বাসের আদান-প্রদান টা খুব বেশি কাছাকাছি হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে আলাদা শোয়া ভালো। অনেক রকম হতে পারে একটিকে বলা হয় ড্রাগ সেনসিটিভ টিভি থাক কিছু সাধারন ওষুধের মাধ্যমে সেটা ভালো হয়ে যায় অন্যটি হচ্ছে ড্রাগ রেজিস্টেন্স টিবি যেখানে টিবির জীবাণু সাধারণ ওষুধে মারা যায় না কিছু জটিল ওষুধ ব্যবহার করতে হয়। 

তবে টিবি রোগের চিকিৎসার সময়কাল আগের থেকে অনেক কমে এসেছে অল্প সময়েই ভালো হয়ে যায় যথাযথ চিকিৎসা করালে। আপনি যদি দেখেন উপরে উল্লেখিত টিভির কোন লক্ষণ আপনার শরীরে দেখা গিয়েছে সে ক্ষেত্রে কোন রকম হয় না পেয়ে সরাসরি চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসকের কর্তব্য হচ্ছে আপনার কোন জায়গায় প্রবলেম হচ্ছে যথাযথ স্যাম্পলিং কি হবে এবং সেই স্যাম্পলটা পাঠিয়ে টিভির জীবাণু আছে কিনা সেটা খুঁজে দেখা।

 যদি দেখা যায় আপনার টিবির জীবাণু আপনার শরীরে রয়েছে সেক্ষেত্রে জাতীয় যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এর অধীনে বাংলাদেশ সরকার বিনামূলক যক্ষা রোগের ওষুধ ও চিকিৎসা গ্রহণ করুন। চিকিৎসকরা সাধারণত ৬ মাস টিবির ওষুধ খেতে বলে তবে কোন কোন টিবির ক্ষেত্রে এর বেশি সময় লাগে। অবশ্যই মাথায় রাখবেন টিভির ওষুধ চিকিৎসক যতদিন খেতে বলবে ততদিনে খেতে হবে। আপনি যদি সুস্থ অনুভব করার পরে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন সে ক্ষেত্রে আপনার শরীরে চান্স রয়ে গেল ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবি তৈরি হওয়ার যা খুবই মারাত্মক।

টিবি ওষুধের সামান্য কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় যেটা জানা খুব জরুরী যেমন টিভি ওষুধে প্রস্রাব কিছুটা লাল হয় কারণ একটা ওষুধের রং ইউরনের মধ্যে দিয়ে বের হতে থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে ঘাম লাল বা কমলাটে বা সরষের তেলের মত হয়ে যেতে পারে এতে ঘাবড়ানোর একদমই কিছু নেই। কারো কারো ক্ষেত্রে গাটে ব্যথা হতে পারে কারো কারো ক্ষেত্রে রেশ বের হতে পারে।কারো ক্ষেত্রে  চোখের দেখার প্রবলেম হতে পারে এ বিষয়ে কিন্তু সতর্ক থাকা জরুরি তখন দেরি না করে সরাসরি চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

টিবি রোগের কারণ বা কেন হয় 

 টিবি এক ধরনের সংক্রমক রোগ যেটা এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া মাইকোব্যাকটেরিয়াম জীবাণু সংক্রমেনের কারণে এটা হয়। আমাদের সকলের কমন ধারণা হলো টিবি রোগ একটি ফুসফুসের রোগ প্রকৃতপক্ষে টিবি রোগ আমাদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত যেকোনো অঙ্গে সংক্রমণ করতে পারে। তবে ৮০% ক্ষেত্রে এটা আমাদের ফুসফুস কে কি করে।বাকি ২০% শরীরের অন্যান্য অর্গান যেমন স্কিনে, হার্টে, চোখে,মুখের বা হাড়ে হতে পারে।

এছাড়া গ্ল্যান্ডে হতে পারে পরিপাকতন্ত্র হতে পারে আমাদের কিডনিতে হতে পারে এমনকি আমাদের যে প্রজননতন্ত্র সেখানেও হতে পারে। যক্ষা রোগের ব্যাকটেরিয়া মাইকোব্যাকটেরিয়াম জীবাণু সংক্রমনের কারণে টিবি বা যক্ষা রোগ হয়ে থাকে। ঠান্ডা ও ফ্লুয়ের  মত এই ব্যাকটেরিয়াও বাতাসে ছড়ায়। টিবি রোগ যেসব কারণে বা যেভাবে হতে পারে তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
 
  1. এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া যার নাম মাইকো ব্যাকটেরিয়াম নামক জীবাণুর সংক্রমণের ফলে এই রোগ হয়
  2. আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি কাশি ও শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় বাতাসের মাধ্যমে  অন্য ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করতে পারে  
  3. অনেকেই আছেন যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের ক্ষেত্রে সংক্রমনের মাধ্যমে টিবি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে 
  4. অপরিষ্কার নোংরা পরিবেশ অপুষ্টিও যক্ষা রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
 যক্ষায় আক্রান্ত ব্যক্তি কাশি ও হাঁচি দেবার সময় যদি মুখে রুমাল না দেয় এক্ষেত্রে তার ড্রপলেট বা থুতুর মাধ্যমে পাশে থাকা অপর ব্যক্তি আক্রান্ত হতে পারে।

কি করে বোঝা যায় ফুসফুসে যক্ষ্মা হয়েছে?

 ফুসফুসের যক্ষা এই ধরনের জটিলতা মূলত তিনটি কারণে হয়ে থাকে এক নাম্বার হলো সঠিক সময়ের রোগটি নির্ণয় করে চিকিৎসা না হওয়া। দ্বিতীয়ত হল রোগ নির্ণয় করার পর নিয়মিত চিকিৎসা না করা। তৃতীয়ত চিকিৎসা অসময়ে শেষ করে দেওয়া। কারণ যক্ষা রোগের শুরুটি হয় ফুসফুস এর ভিতর থেকে। এটা যখন ভালো হয় তখন এটা শরীরের ভেতর একটি মার্ক বা দাগ রেখে যায় যেটাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয় ফাইব্রোসিস (Fibrosis)। আপনি যদি যক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে না করেন তাহলে ফাইব্রোসিস টা ফুসফুসে খুব বেশি হয়।
 
আপনি যক্ষা রোগের শুরুতেই যদি চিকিৎসা শুরু করে দেন তাহলে জটিলতা টা অনেকাংশেই কমে যাবে। তার জন্য আপনাকে তিনটা জিনিস মনে রাখতে হবে এক হচ্ছে সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা করা নিয়মিত চিকিৎসা করা এবং চিকিৎসা সময়মতো শেষ করা। ফুসফুসের জোকা বা টিভি রোগের কারণ গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।

  1.  তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে 
  2.  কাশি দেয়ার সময় বুকে ব্যথা অনুভূত হওয়া
  3.  কাশির সাথে কফ যা আঠালো প্রকৃতির অনেক সময় কাশির সাথে রক্ত পর্যন্ত বের হতে পারে 
  4.  কাশি ও  শ্বাসকষ্টের সাথে ব্যথা
  5.  রাতে ঘাম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
  6.  শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া ক্লান্ত অনুভূত হাওয়া 
  7.  জ্বর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
  8.  কোন কিছু খেতে ইচ্ছে না করা ও ওজন কমে যাওয়া।

 টিবি রোগ হলে মানুষটি মারা যায়?

 আমাদের দেশে অনেক আগে বলা হত "যক্ষা হলে রক্ষা নাই"। "কিন্তু এখন যক্ষা হলে রক্ষা নাই এ কথার কোন ভিত্তি নেই "। তবে যক্ষা রোগ হলে অনেক মানুষ মারা যেত কারণ তখন চিকিৎসা ব্যবস্থা ততটা উন্নত ছিল না। যক্ষা শুধু ফুসফুসেই নয় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে এতে আক্রান্ত করতে পারে। তাই কার্যকর চিকিৎসা না থাকার কারণে অনেক মানুষ মারা যেত। কিন্তু এখন আর তা হয় না সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় নিয়মিত চিকিৎসা করালে এই রোগ ভালো হয়ে যায়।

 আপনি যদি ওপরে আলোচিত টিবি রোগের লক্ষণ ও উপায় সম্পর্কে পড়ে থাকেন তাহলে টিবি রোগ নিয়ে ভয় পাবার বা ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই।সঠিক সময়ে নিয়মিত যদি আপনি চিকিৎসা নেন তাহলে অবশ্যই টিবি রোগ ভালো হয়ে যায়। তবে সঠিক সময়ে রোগ নিরূপণ করে চিকিৎসা না নিলে জটিলতা অনেক বাড়তে পারে পানি আসতে পারে। এই ধরনের জটিলতা এড়াতে সঠিক সময় নিয়মিত চিকিৎসা জটিলতা প্রায় ৯৯ ভাগ সম্ভব।

টিবি রোগ কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়?

 উপরের আলোচনা থেকে আপনারা জেনেছেন টিবি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার কিভাবে করা যায় এবার আসুন জেনে নেয়া যাক টিবি রোগ কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় সে সম্পর্কে। যক্ষা হলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই আমাদের সচেতনতাই পারে এই রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ করতে। যক্ষা রোগ হলে কি করতে হবে সেই সম্পর্কে আমরা জেনেছি। যক্ষা যেন আমাদের শরীরে বাসা না বাধে সেই ক্ষেত্রে আমাদের কিছু পদক্ষেপ অসচেতনতা তৈরি করা উচিত।

  •  আমরা অনেকেই জানি বিসিজি টিকা বাচ্চাদের যক্ষা রোগ প্রতিরোধে দেয়া হয়ে থাকে। এইটা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে যক্ষার বিরুদ্ধে লড়তে করে।
  •  এছাড়া আমাদের পরিবেশকে ইফতার পরিচ্ছন্ন রেখে ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে যক্ষা রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
  •  মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি মাধ্যমে আমরা এ রোগ রোগ  প্রতিরোধ করতে পারি।
  • এছাড়া হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় মুখ ঢেকে দেওয়া। অনেকেই আছে হাঁচি কাশি দেয়ার সময় মুখে টিস্যু বা রুমাল ব্যবহার করি না এটি শুধু যক্ষা রোগীর ক্ষেত্রে না এটি সব সময় ব্যবহার করা উচিত।
  • ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করে। যেহেতু যক্ষা একটি সংক্রামক ব্যাধি যা বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সে ক্ষেত্রে দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি।

টিবি রোগের পরীক্ষার নাম ও চিকিৎসা

 যক্ষা বা টিবি রোগ খুব কমন একটি সমস্যা যা বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য দেশ যেমন ইন্ডিয়া পাকিস্তান আফ্রিকা খুব বেশি পরিমাণে এই রোগটি দেখা যায়। অনেক সময় কফ পরীক্ষার মাধ্যমে স্কিনে টিবি পরীক্ষার মাধ্যমে যক্ষা ধরা পড়ে না। কফ পরীক্ষার মাধ্যমে যে টিবি  নির্ণয় করা হয় সেটি মূলত ফুসফুসের টিবি। ফুসফুসের টিবি নির্ণয় করা অনেকটাই সহজ কারণ বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় করা যায়। এটি কফ পরীক্ষার মাধ্যমেই সহজে নির্ণয় করা যায়।

  1.  এখন কথা হল কফ পরীক্ষার মাধ্যমে যদি টিভি বা যক্ষা রোগ নির্ণয় না করা যায় সে ক্ষেত্রে করনীয় কি।সেক্ষেত্রে টিবি বা যক্ষা রোগের যে ডিএনএ টেস্ট সেগুলো দিয়ে  থাকেন চিকিৎসকরা। এটি যক্ষা রোগ নির্ণয়ের একটি বিশেষ পরীক্ষা যেটাকে জিন এক্সপার্ট (জেনারেল Expert)বলা হয়ে থাকে।এই বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে যক্ষা রোগের জীবাণু অল্প থাকলেও সেটা শনাক্ত করা যায়।
  2. যদি জিন এক্সপার্ট পরীক্ষার মাধ্যমে ও শনাক্ত করা সম্ভব না হয় সে ক্ষেত্রে বুকের এক্সরে বা সিটি স্ক্যান দেখে টিবির লক্ষণ গুলো দেখে বোঝা যায।
  3. এখন যদি দেখা যায় কফে যক্ষার জীবাণু নেই সে ক্ষেত্রে করণীয় হলো মেশিনের মাধ্যমে যেটাকে বলে ব্রণ কস্কোপ এর মাধ্যমে শ্বাসনালী থেকে যক্ষার জীবাণু ও কফগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে আসা যায়।
  4. এছাড়া ফুসফুসের বাইরেও অনেক সময় পানি জমে যায় সে ক্ষেত্রেই পানিটাকে পরীক্ষা করতে হয়। পরীক্ষা করে যদি যক্ষা নিশ্চিত করা যায় ভালো আর যদি তা না হয় তাহলে প্ররোস্কোপি নামক একটি পরীক্ষা আছে প্ররোস্কোপি করে বায়োপ্সি করা হয়ে থাকে। এই বায়োপসি মাধ্যমে যক্ষা শনাক্ত করা যায় যদি যথা নাও থেকে থাকে যদি ক্যান্সার থাকে সেটাও শনাক্ত করা সম্ভব।
  5.  যাদের হাড়ের ভিতর টিবি হয় সেক্ষেত্রে এমআরআই করে শনাক্ত করা যায়।
  6.  কারো কারো ক্ষেত্রে গ্ল্যান্ডের টিবি হলে সেক্ষেত্রে বায়োপসির মাধ্যমে শনাক্ত করা যায়। 
  7. শরীরের অন্য কোন অংশে টিবি হলে আক্রান্ত স্থান থেকে টিস্যু নিয়ে বায়োপসি করা হয়।

 টিবি বা যক্ষা রোগের খাদ্য তালিকা 

 টিবি রোগের সাধারণত ওজন কমে যায় কারণ কেউবা কিলোসিস এত দ্রুত আক্রমণ করে যে আমাদের সেলগুলোকে নষ্ট করে দেয়। একজন টিবি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্রচুর পরিমাণ হাই প্রোটিন খেতে। বয়স ও ওজন অনুযায়ী প্রতিদিন মুরগি, ডিম,দুধ, ছোলা মিক্স বাদাম নিয়মিত  খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। একজন যক্ষা রোগীকে  সারাদিনের ৬ থেকে ৮ বার একজন যক্ষা রোগীকে খেতে হয় রোগীর ওষুধের কার্যকারিতা কে ঠিক রাখার জন্য। 

যেহেতু এবার কিউরসিসের কার আক্রান্ত হওয়ায় সেলগুলোকে নষ্ট করে দেয় সে ক্ষেত্রে তার সেল ডিভিশন বা মাসেলস টাকে ঠিক রাখার জন্য প্রোটিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু খাদ্য রয়েছে যা টিবি রোগীকে অবশ্যই খেতে হবে নিচে সেগুলো তুলে ধরা হলো।

  1.  প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন মুরগি, মাছ ও চর্বহীন মাংস ইত্যাদি 
  2.  ডিম দুধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাবার দই পনির ইত্যাদি 
  3. এছাড়া রয়েছে ছোলা মটরশুঁটি ডাল মসুরের ডাল ইত্যাদি খাদ্য তালিকা নিয়মিত রাখতে হবে 
  4.  সবুজ শাকসবজি ও বিভিন্ন রঙের ফল যেমন পালং শাক,কালে ও কলার্ড  শাক, কমলার জাম্বুরা ব্লু বেরি স্ট্রবেরি গাজর ইত্যাদি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
  5.  খাদ্য তালিকা রাখতে হবে তা হচ্ছে জলপাই তেল অ্যাভোকাডো, বাদাম ও বীজ ইত্যাদি স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবার 
  6.  অবশ্যই প্রতিদিন বেশি পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

গ্লান্ড টিবি রোগের লক্ষণ গুলো কি কি?

 আমরা জানি টিবি দেখা বা যক্ষা  সাধারণত ফুসফুসের হয়। যক্ষার জীবাণু আমাদের ফুসফুসে আক্রমণ না করে যদি আমাদের লিম্প নোডের ভিতরে গিয়ে বাসা বাঁধে তখন তাকে বলে গ্ল্যান্ড টিবি। বাংলাদেশসহ এই ভারতীয় উপমহাদেশে এত বেশি পরিমাণ যক্ষা রোগের প্রধান কারণ হলো অসচেতনতা এবং সময়মতো টিকা না গ্রহণ।সাধারণত আমাদের গলার ভেতরে টনসিল থাকে সেখান থেকে টিউবারকিউলোসিসের জীবাণুগুলো ঢুকে এবং সেখান থেকে গ্ল্যান্ড টিবি হয়ে থাকে। এই জীবাণুগুলো আমাদের লিম্প নোডে গিয়ে বাসা বাঁধে ও বড় হয়।
 গ্লান্ড টিবির লক্ষণ :
  • ঘাড়ে বা শরীরের অন্যান্য অংশের গ্রন্থিগুলো ফুলে যায় এবং ঘাড়ের দুই পাশে  দুই পাশে যে গোটাগুলো হয় হাত দিলে গরম অনুভূত হয়।
  • সাধারণত সন্ধ্যার দিকে জ্বর আসতে পারে 
  • ক্ষুধা মন্দা ওজন কমে যাওয়া 
  • কাশির সাথে কফ
  • এছাড়া ও রাতের বেলায় ঘাম হওয়া সবই হচ্ছে গ্ল্যান্ড টিবি রোগের সাধারণ লক্ষণ।

শেষ কথা : টিবি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার 

 টিবি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। প্রিয় পাঠক আপনারা যদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন টিবি রোগ নিয়ে ভয় পাবার আসলেই কিছু নেই নিয়মিত চিকিৎসায় টিবি ও ভালো হয়। কিন্তু এখনো অনেক মানুষ আছে যারা টিবি রোগের কথা শুনলেই ঘাবড়ে যায়। বর্তমান উন্নত চিকিৎসা বিজ্ঞান এর কল্যাণে টিভি রোগ নিরাময় খুব সাধারন একটি ব্যাপার। এবং অন্যান্য সাধারণ রোগের মতই এটি একটি রোগ।

 যেহেতু টিবি একটি সংক্রামক রোগ ও বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় তাই টিবি রোগীর থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। শুধু তাই নয় জন সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সাধারণ মানুষকে টিবি রোগের বিস্তার ও প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। কারণ সঠিক সময়ে যদি যক্ষা সনাক্ত না করা যায় সে ক্ষেত্রে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই সঠিক সময়ে রোগ নিরূপণ নিয়মিত চিকিৎসা যক্ষা রোগীর জন্য আবশ্যক। প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিজনদের নিকট শেয়ার করার অনুরোধ রইলো ভালো থাকবেন।
 




















 










এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Growwithnazmin এর'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url