প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হওয়ার সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই লেখাটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। সুন্দর হতে কে না চায় তাই প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছি।
যদিও গায়ের রং সৌন্দর্যের মাপকাঠি হতে পারে না। তারপরও আমরা অনেকেই ক্ষতি জেনেও কেমিক্যাল প্রোডাক্ট এর ব্যবহার করি একটু উজ্জ্বল বা ফর্সা হবার আশায়। আজকে এই পর্বে প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হওয়ার বিভিন্ন টিপস আপনাদের সামনে তুলে ধরব।
পেইজ সূচিপত্র: প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হওয়ার উপায়
- প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হওয়ার উপায়
- ভেতর থেকে ফর্সা হওয়ার উপায়
- স্থায়ীভাবে ফর্সা হওয়ার উপায়
- কোন ভিটামিন খেলে চেহারা সুন্দর হয়?
- তৈলাক্ত ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়
- ত্বক ফর্সা বা কালো হওয়ার কারণ কি?
- কাঁচা হলুদ খেলে কি ত্বক ফর্সা হয়?
- শেষ কথা:প্রাকৃতিক ভাবে ফর্সা হওয়ার উপায়
প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হওয়ার উপায়
জেনেটিকসের কারণে জন্মগত ভাবে কেউ লাইফ স্কিনটোন এবং কেউ রিচ স্কিনটোন বা কালো হয়ে থাকে। দ্বিতীয় ফ্যাক্টর টি হলো লাইফ স্টাইল ফ্যাক্টর। আমাদের লাইফ স্টাইল মেলানিন উৎপাদনের ওপর ভূমিকা রাখতে পারে। সবার আগে যে গুলো নিয়ে আলোচনা করব সেগুলো হচ্ছে লাইফস্টাইল ফ্যাক্টর। এরপরে আমি যাব জেনেটিক্স। টিপস গুলো নিচেও তুলে ধরা হলো
স্ক্রিন বা ত্বক পরিষ্কার রাখা
- আমরা জন্মগতভাবে যেই স্কিনটোনের অধিকারী হয় না কেন মাসের পর মাস
বছরে পর বছর যখন স্কিনের সঠিক যত্ন না নিবেন তখনই চিনে ময়লা জমে তোকে
কালকে রং ধারণ করে। তাই আমরা যেই দূষণের যুগে অবস্থান করছি একটি ভালো
মানের ফেসওয়াশ দিয়ে অন্তত একবার ঘুমাতে যাবার আগে স্কিন পরিষ্কার করা
খুবই জরুরী।
তাই বলে কোন ধরনের হার্শ সাবান বা হোয়াইটেনিং ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে
যাবেন না।
- তৈলাক্ত ত্বকের জন্য শক্তিশালী অসুস্থতার জন্য জেন্টেল ফেসওয়াশ
ব্যবহার করুন।
স্কিনের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা
হোমমেড ফেসপ্যাক ব্যবহার করা
- প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হবার উপায় সম্পর্কে যদি জানতে চান তাহলে বলবো অবশ্যই হোমমেড ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন। প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হতে চাইলে প্রথমেই ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করুন। এক টেবিল চামচ মধু এক টেবিল চামচ গুঁড়োদুধ এক টেবিল চামচ লেবুর রস ও আধা টেবিল চামচ বাদাম তেল অথবা অলিভ অয়েল ( যদি থাকে) ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত। এরপর মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন এটি করুন।
- উজ্জল ও ফর্সা পেতে চন্দনের জুরি নেই। যুগ যুগ ধরে ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই চন্দন কাঠের গুড়া। তাই তৎ ফর্সা করতে মুখের বলিরেখা দূর করতে এবং ব্রণের সমস্যা দূর করা স্কিনের টেক্সচার উন্নত সপ্তাহে অন্তত ৪ দিন দুধের সাথে চন্দনের গুড়া মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
- উজ্জ্বল ও লাইটেনিং টক পেতে টমেটোর পেস্ট এর সাথে কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট। তবে আপনার যদি সমস্যা থাকে সে ক্ষেত্রে না ব্যবহার করাই ভালো
- মুখের সব ময়লা দূর করতে চাইলে পাকা কলা চটকে লাগান অন্তত সপ্তাহে ৩ দিন।
- এ ময়শ্চারাইজ করতে চোখের নিচে কালো দাগ ও রোদে পোড়া ভাব দূর করতে শসা রস আর করুন নিয়মিত। নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করবে।
- ত্বকে উজ্জ্বল ও সুন্দর দেখাতে হলুদ একটি কার্যকরী উপাদান যাতে আমরা সবাই জানি।১/২ চা চামচ অরিজিনাল হলুদ গুঁড়া সাথে সামান্য বেসন দুধ অথবা পানি মিশিয়ে সে পেস্ট তৈরি করে আপনার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন শুকিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত।এটি মাসে অন্তত ২ বার লাগান।
রোদ এড়িয়ে চলা
- নিয়মিত রোদে থাকার কারণে ন্যাচারাল স্কিনটোন পরিণত হয়। তাই আপনার ত্বকের ফর্সা ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে চাইলে নিয়মিত সানস্ক্রিন ছাতা ব্যবহার করুন। তুমি চাইলে খুব সহজেই ঘরে বসে সানস্ক্রিন বানিয়ে ফেলতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে,এলোভেরা জেল,ভিটামিন ই ক্যাপসুল,গোলাপজল সিরাম দিয়ে ঘরে বসেই বানিয়ে নেয়া স্ক্রিন বানিয়ে নেয়া সম্ভব। এটি শুধু সানস্ক্রিন হিসেবে কাজ করবে না ত্বকে উজ্জ্বল ও নরম করে তুলবে।
- ত্বকের বলিরেখা ও অকাল পার্থক্য ঠেকাতে ভিটামিন সি সিরামের জুড়ি নেই।তাই নিজেই ঘরে বসে বানিয়ে ফেলুন
নিয়মিত মশ্চারাইজার ব্যবহার করা ব্যবহার করা
ভেতর থেকে ফর্সা হওয়ার উপায়
কলা :কলাতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ যা ত্বকের মলিন ভাব দূর করে
উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
গাজর : নিয়মিত গাজর খেলে
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি টক হয়ে ওঠে সজীব এতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন
যা ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু মেরামত করার পাশাপাশি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে
ত্বকে সুরক্ষা দেয়।
বাদাম: যেকোনো বাদামেই রয়েছে ওমেগা ৩
ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন ই ভিটামিন ই যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে প্রভাবক
হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত খাদ্য তালিকায় কিছুটা হলেও বাদাম রাখুন।
গ্রিন টি:
গ্রিন টি এ রয়েছে ক্যাটেচিন নামক এক প্রকার এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরকে
বিষমুক্ত করতে সাহায্য করে নিয়মিত গ্রিন টি পানে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির
পাশাপাশি ব্রণের সমস্যা সমাধানের সহায়তা করে।
শাকসবজি : শাকসবজিতে
রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি যা আমাদের ত্বকের কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে। শাক
সবজির ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ত্বকের টানটান ভাব ধরে রাখত সহায়তা
করে।
অন্যান্য ফল ও সবজি: এছাড়া আম টমেটো করোল্লা মিষ্টি কুমড়া পেঁপে ও
হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। খাদ্য তালিকায় নিয়মিত এই
খাবারগুলো রাখার চেষ্টা করুন।
স্থায়ীভাবে ফর্সা হওয়ার উপায়
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে ও ধরে রাখতে আপনাকে অবশ্যই সর্বপ্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হচ্ছে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা। রান্না করার সময় অথবা রোদ্রে বের হওয়ার সময় একটি ভালো সানস্ক্রিন অথবা বাসায় তৈরি সান স্ক্রিন ব্যবহার করুন।
- ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করুন মশ্চারাইজার লাগান। ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করতে মুশুরের ডাল অথবা চালের গুড়া দুধের সাথে মিশিয়ে স্ক্রাব করুন।এটি ত্বকের ব্ল্যাকহেডস হোয়াইটহেডস ও ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ও প্রাকৃতিক স্ক্রাবার হিসেবে কাজ করে।
- শসা ও আলুর রস ব্যবহার করুন।
- চন্দন গুড়ার ফেসপ্যাক, লেবু মধুর ফেসপ্যাক হলুদের গুড়া ও বেসনের ফেসপ্যাক সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন ব্যবহার করুন। তবে ত্বকে এলার্জি সমস্যা থাকলে লেবু এড়িয়ে চলুন।
- প্রতিদিন অন্তত ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করুন। পর্যাপ্ত পানির অভাবে ত্বক ডিহাইড্রেট হয় এবং স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি ও রসালো ফল খান।
- ত্বক স্বাস্থ্যকর ও সতেজ রাখতে দৈনিক ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমান। ঘুমের সময় ত্বক কোষ মেরামত করে এবং নতুন কোষ তৈরি করে। তাই তোকে সুন্দর রাখতে চাইলে প্রতিদিন অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমান।
কোন ভিটামিন খেলে চেহারা সুন্দর হয়?
তৈলাক্ত ত্বক ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়
- দিনে অন্তত দুই বার ভালোভাবে মুখ ভালো সাবান অথবা ভালো মানের ফেসওয়াস দিয়ে পরিষ্কার করুন।
- বারবার ফেস ওয়াশ বা সাবান দিয়ে মুখ ধোয়ার পর আপনি যদি ত্বকে মশ্চারাইজ না করেন তাহলে ত্বক অতিরিক্ত তেল বের করে। তাই যখনই আপনি মুখ ধুবেন আপনাকে সুট করে এমন একটি মশ্চারাইজার ব্যবহার করুন সেটা হতে পারে ঘরে তৈরি মশ্চারাইজার।
- নিয়মিত শসার রস দিয়ে পরিষ্কার করলে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর হয়ে যায়।
- গোলাপজল ও লেবুর রস মুখে লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর তুলো দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে। এতে ব্রণ ও ফুসকুড়ির দাগ থাকলে সেটিও চলে যাবে।
- এক টেবিল চামচ বেসনের সঙ্গে সামান্য হলুদের গুঁড়ো ও টক দই মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন শুকিয়ে না যাওয়া অব্দি। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন এতে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর হবে।
- এক টেবিল চামচ মুলতানি মাটি ও এক টেবিল চামচ চন্দনের গুঁড়ো পানি দিয়ে গুলিয়ে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট। শুকিয়ে যাওয়ার পর ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললেই আয়নার সামনে দেখতে পাবেন তেল-হীন মসৃণ ত্বক।
ত্বক ফর্সা বা কালো হওয়ার কারণ কি?
- বংশগতি বা জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে ত্বকের রং কালো হয়
- বিভিন্ন উপাদান যেমন ভিটামিন এ বি সি এর অভাব হলে ত্বক কালো হয়ে যায়
- অতিরিক্ত সূর্যের আলোতে থাকলে ত্বকে মেলানিনের উৎপাদন বেড়ে যায় এবং ত্বক কালো দেখায়।
- চর্ম রোগের কারণেও অনেক সময় ত্বক কালো হয়ে যায়।
- কালো হয়ে যাওয়ার অন্য আরেকটি কারণ হলো লিভারের সমস্যা।
- বিভিন্ন সময় হরমোনের পরিবর্তনের কারণেও ত্বক কালো হয়ে থাকে যেমন গর্ভাবস্থায় মেনোপজ ও পিল খাওয়ার সময়।
- ছাড়া বয়স বাড়ার সাথে সাথে মিলানিনের উৎপাদন বেড়ে যাওয়ার কারণে ও মানুষ কালো হয়ে যায়।
Growwithnazmin এর'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url